শুক্রাণু কি ?

শুক্রাণু-বৃদ্ধির-উপায়-শুক্রাণু-কমে-যায়-যাওয়ার-কারণ
শুক্রাণু-বৃদ্ধির-উপায়-শুক্রাণু-কমে-যায়-যাওয়ার-কারণ


শুক্রাণু বলতে পুরুষ প্রজনন কোষকে বোঝায় যা অণ্ডকোষে উৎপন্ন হয়। শুক্রাণু এবং ডিম্বানুর মিলনের ফলে গর্ভাবস্থা তৈরী হয়। স্বামী এবং স্ত্রীর মিলনের সময় বীর্যপাতের সঙ্গে বীর্য স্ত্রীর জরায়ুতে প্রবেশ করে সেখান থেকে, শুক্রাণু মহিলাদের ডিম্বাশয় দ্বারা নির্গমনকৃত ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার জন্য জরায়ুমুখের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে।

infertilityorg

infertility & Health tips এর আপডেট তথ্য পেতে google news” অনুসরণ করুন


শুক্রাণুতে কি কি থাকে ?


পুরুষের শুক্রাণুতে ২৩টি ক্রোমোসোম থাকে এবং নারীর ডিম্বাণুর ২৩টি ক্রোমোসোম থাকে । পুরুষের ২৩ জোড়া এবং নারীর ২৩ জোড়া ক্রোমোসোম  সঙ্গে একত্রিত হয়ে ৪৬টি ক্রোমোসোম বিশিষ্ট ডিপ্লয়েড কোষ তৈরি করে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ভিতরে শুক্রাণু এপিডিডিমিসে সঞ্চিত থাকে এবং বীর্যস্খলনের সময় বীর্য নামের তরলের সাহায্যে শুক্রাণু নির্গত হয়।

শুক্রাণু তৈরি হতে কত সময় লাগে?


সাধারণত শুক্রাণু তৈরি করার জন্য প্রায় তিন মাস সময় লাগে। শুক্রাণু তৈরীর প্রক্রিয়া অবিচ্ছিন্ন. অণ্ডকোষ ক্লান্তিহীন শুক্রাণু তৈরী এবং সঞ্চয় করে। একজন পুরুষের শরীরের মধ্যে, পরিপক্ক শুক্রাণু অণ্ডকোষের ভিতরে কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকতে পারে।

আরও জানুনঃগর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার ?

কত বছর বয়সে পুরুষের বীর্য উদ্ভাবন বন্ধ হয় ?

পুরুষের শুক্রাণু সারা জীবন তৈরী হয়। ৩৫ বছরের পর শুক্রাণু তৈরীর পরিমাণ কমতে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শুক্রাণুর গতিশীলতা, আয়তন এবং জেনেটিক গুণগত মান কমতে থাকে এবং গর্ভধারণের সম্ভবনা কমতে থাকে।

কত শতাংশ স্পার্ম ৪ দিন বাঁচে ?


শুক্রাণু তার সাথে ডিম্বাণুর বেঁচে থাকার সময় যথাক্রমে 1.4 দিন তার সাথে 0.7 দিন বলে ধারনা করা যায়। শুক্রাণুর ৪.৪ দিনের অধিক বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৫% এবং ৬.৮ দিনের বেশি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা 1% থাকবে।

আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের যত্ন কি কি এবং গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা ? গর্ভবতী মায়ের কি কি চেকআপ করা দরকার ?

৫০ বছর বয়সে কি পোলা সন্তান হতে পারে ?


সংক্ষেপে, হ্যাঁ । যদিও বেশিরভাগ পুরুষ ৫০ বছর বয়সে সন্তান ধারণ করতে পারে। কিন্তু ৪০ বছর বয়সের পরে এটি আস্তে আস্তে অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে এবং এর অনেকগুলি রিজন রয়েছে, যার ভিতরে রয়েছে: বয়সের সাথে শুক্রাণুর গুণমান কমতে থাকে।

বীর্যে শুক্রানুর সংখ্যা কত ?

শুক্রাণু-বৃদ্ধির-উপায়পুরুষের-বন্ধ্যাত্ব-দূর-করার-উপায়
শুক্রাণু-বৃদ্ধির-উপায়পুরুষের-বন্ধ্যাত্ব-দূর-করার-উপায়


একজন সুস্থ পুরুষের ক্ষেত্রে প্রতিবার বীর্যপাতে ১.৫ থেকে ৫ মিলিলিটার বীর্য নির্গমনকৃত হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে প্রতি ১ মিলিলিটার বীর্যের ভিতরে ১৫ হতে মেক্সিমাম ২০০ মিলিয়ন পর্যন্ত শুক্রাণু থাকতে পারে।

সর্বনিম্ন ১৫ মিলিয়নের কম শুক্রাণু থাকে তাহলে তাকে অলিগোস্পার্মিয়া (Oligospermia) বলা হয় । সন্তান ধারণ করার জন্য সুস্থ সবল একটি শুক্রাণুই যথেষ্ট। কিন্তু ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য শুক্রাণুকে জরায়ুর ভেতরে অনেক লম্বা পথ অতিক্রম করতে হয়।  এই সময় অধিকাংশ শুক্রাণু মারা যায় । তবে গর্ভধারণের জন্য একটি শুক্রাণুই ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে গর্ভবাস্থার সৃষ্টি করে। আর তাই ১ টি নয়, বরং মিনিমাম ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণু প্রতি মিলিলিটারে কিংবা ৩৯ মিলিয়ন প্রতিবার বীর্যপাতে না থাকলে সেক্ষেত্রে সন্তান উৎপত্তি দেওয়ার সামর্থ্য প্রচুর কমে যায় বলে মনে করা হয়। শুধুমাত্র সংখ্যা নয়, বরং সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য শুক্রাণুর আরো ২ টি তাৎপর্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরী।

আরও জানুনঃ গর্ভাবস্থায় রক্তের চাপ বেড়ে যাওয়া এবং গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ হলে কি হয় ? গর্ভাবস্থায় প্রেসার লো হলে করণীয় ?

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য কি কি রোগ দায়ী এবং পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় ?

 ‍Sperm Motiltiy: শুক্রাণু জরায়ুর ভেতরে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়, এ জন্য শুক্রাণুর চলাচলে সক্ষমতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।  সন্তান ধারণের জন্য মিনিমাম ৪০ শতাংশ বা বেশী সংখ্যক শুক্রাণুর চলাচলের সক্ষমতা বা ‍Sperm Motiltiy থাকতে হবে।
Sperm Morphology:  একটি সুস্থ শুক্রাণুর তিনটি অংশ রয়েছে। এগুলো হলোঃ

শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় ? পুরুষের-বন্ধ্যাত্ব-দূর-করার-উপায়-শুক্রাণু-বৃদ্ধির-উপায়
শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় ? পুরুষের-বন্ধ্যাত্ব-দূর-করার-উপায়-শুক্রাণু-বৃদ্ধির-উপায়
  • হেড
  • মিড পাইজ
  • লেজ বা টেল

 সুস্থ স্বাভাবিক শুক্রাণুর মাথার অংশ ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে এবং জরায়ুতে চলাচলের জন্য সাহায্যকারী লম্বা লেজ থাকে। বীর্যের ভিতরে যত কম সংখ্যক শুক্রাণুর গড়ন স্বাভাবিক থাকে, তত সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।

আরও জানুনঃ ওভুলেশন কি ? ওভুলেশন কিভাবে হয় ? ডিম্বাণু কত দিন জীবিত থাকে|গর্ভধারণের জন্য সবচাইতে উপযুক্ত সময় বোঝার উপায় ?

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য কি কি রোগ দায়ী:

Low sperm count/ Oligozospermia Or Oligospermia : শুকাণুর সঠিক সংখ্যা হলো ১ মিলি বীর্যে ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকেবে। এটির কম হলে এটিকে Low sperm count/ Oligozospermia Or Oligospermia  বলা হয়।

Asthenozoosspermia Or Asthenospermia : যদি শুক্রাণুর চলাফেরার ক্ষমতা কম থাকে তাহলে এই রোগের নাম Asthenozoosspermia Or Asthenospermia.

Teratozoospermia Or Teratospermia : যদি শুক্রাণুর গঠনগত সমস্যাকে Teratozoospermia Or Teratospermia বলা হয়।

Azoospermia Or Aspermia : এটি পুরুষের সবচেয়ে কঠিন রোগ। পুরুষের বীর্যে কোন শুক্রাণু থাকে না।

আরও জানুনঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ কি কি ? প্রসব ব্যথা বা ডেলিভারির ব্যথা কেমন হয় এবং শুরু হওয়ার লক্ষণ সমূহ ?

শুক্রাণু কমে যায় যাওয়ার কারণ ?


শুক্রাণু উৎপাদনের সঙ্গে শরীরের হাইপোথ্যালামাস, পিটুইটারি গ্ল্যান্ড ও অন্ডকোষের অবদান সবচেয়ে বেশি।

যে সব কারণে শুক্রাণু তৈরীর সংখ্যা কমতে থাকে তা হলোঃ

  • Hypothalamus and Pituitary Gland থেকে যথাযথ হরমোন নিঃসরণ না করা ;
  • অন্ডকোষের গঠনগত সমস্যা যেমনঃ অন্ডকোষ ছোট, ভেরিকোসিল, টিউমার থাকলে;
  • টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি;
  • Infection of the testicles;
  • বংশগত সমস্য;
  • ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন কেমোথেরাপি, এন্টি ফাংগাল, এন্টি বায়োটিক ইত্যাদি;
  • বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শুক্রাণু উৎপাদনের কমে যায়। সাধারণত ৫০ সালের পর হতে শুক্রাণুর পরিমান ও গুণগত মান কমতে থাকে;
  •  ধুমপান ও মদ্যপায়ী ব্যক্তি;
  • শরীরের অধিক ওজন বা স্থূলতা;
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং হতাশা;
  • দীর্ঘসময় বসে কাজ করতে হয় এরূপ পেশার মানুষ;
  • ইতিপূর্বে অন্ডকোষে সার্জারি করা হয়েছে এইরকম ব্যক্তি;
  • অতিরিক্ত টাইট আন্ডারওয়ার পড়া;
  • কিছু রোগ যেমন এনিমিয়া,ডায়াবেটিস, থাইরোয়েড জনিত সমস্য;
  • সালফাসালাজিন জাতীয় ওষধ সেবন করা;
  • রেডিও থেরাপি;

আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের প্রসব পরিকল্পনা কি ? ভালো প্রসব পরিকল্পনায় কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ?

শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় বা বীর্যে শুক্রাণু বৃদ্ধির খাবার ?

  • পুরুষের যৌন হরমোন বৃদ্ধি সহ শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান বাড়াতে খাবারের পর্যাপ্ত তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও ট্র্যান্স ফ্যাট যতটা পসিবল বর্জন করতে হবে।  সেই সঙ্গে নিম্নলিখিত গুলো বেশি বেশি খাওয়ার হ্যাবিট গড়ে তুলুন। যেমনঃ
  • লাইকোপেন (Lycopene) শুক্রাণুর পরিমান ও Motiltiy বাড়াতে সহায়তা করে;
  •  টমেটো, তরমুজ, গাজর, পেপে, আম ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত অধিক পরিমাণে লাইকোপেন রয়েছে;
  • সব ধরনের বাদাম বিশেষ করে আখরোট (Walnuts) অনেক বেশি মঙ্গলময় ভূমিকা পালন করে থাকে;
  • মাছে প্রচুর সংখ্যায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রয়েছে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড শুক্রাণুর Motiltiy বাড়াতে সহায়তা করে;
  • ভিটামিন সি, ডি ও জিংক জাতীয় খাবার;
  • প্রচুর সংখ্যায় শাক সবজি

ডিসক্লেইমার: এখানে উপরোক্ত হেলথটিপস এবং পরামর্শগুলি অনুসরণ করার পূর্বে , ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিন।

রিলেটেড ট্যাগঃ শুক্রাণু কি, শুক্রাণু তৈরি হতে কতদিন সময় লাগে,শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায়,শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় ঔষধ, ইসলামে শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায়, শুক্রাণুর গতি বৃদ্ধির উপায়, শুক্রাণু বৃদ্ধির ব্যায়াম, বীর্যে শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায়,শুক্রাণু বৃদ্ধির খাবার