গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মা-বাবারই বাসনা থাকে গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে হবে তা জানার। আর এর জন্য অন্ত:স্বত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই অনাগত সন্তানের লিঙ্গ নিয়ে আকুলতার সীমা থাকে না সেই দম্পত্তির। স্মার্ট চিকিৎসায় আলট্রাস্নোগ্রাফের সাহায্যে লিঙ্গ জানা গেলেও তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু গর্ভবতী মানবীর কয়েকটি লক্ষণ দেখে খুব সহজেই আপনি জানতে পারবেন গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে হবে।

প্রতিটি নারীর জীবনেই গর্ভাবস্থা একটি বিশেষ সময়। এই ৯ মাসের অভিজ্ঞতা একজন হবু মা ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন না, কারণ তার শরীরে একটি নতুন প্রাণ ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে। এই সময়টায় মায়েদের মধ্যে এক ধরনের মিশ্র অনুভূতি কাজ করে, যেমন আনন্দ, ভয়, এবং উদ্বেগ। এছাড়া, বেশিরভাগ সময় মায়েরা ভাবেন, তাদের গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে। কিছু প্রাচীন টোটকা দিয়ে এটি আন্দাজ করার চেষ্টা করা হয়। চলুন দেখে নিই, গর্ভাবস্থার কোন লক্ষণ দেখে ছেলে বা মেয়ে হওয়া বোঝা যায়—

গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে, তা জানা যাবে মায়ের রক্তচাপ দেখে! ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার গবেষক রবি রত্নাকরণ জানিয়েছেন, যদি মায়ের রক্তচাপ প্রসবের আগে কম থাকে, তবে সাধারণত তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। আর যদি রক্তচাপ বেশি থাকে, তবে পুত্র সন্তানের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

২০০৯ সাল থেকে চীনের লুইয়াং শহরে ৩৩৭৫ জন গর্ভবতী মহিলার ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। এর মধ্যে ১৬৯২ জন মহিলার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং গ্লুকোজ পরিমাপ করা হয়। গবেষণার শেষে দেখা যায়, ৭৩৯ জনের ছেলে এবং ৬২৭ জনের মেয়ে হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে গবেষক দল এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

গবেষক রবি রত্নাকরণ বলেন, ‘গর্ভবতী মায়ের প্রসবের আগে রক্তচাপের ওঠানামা অনেক কিছু নির্দেশ করে। আমরা দেখেছি, যদি রক্তচাপ কমে যায়, তবে কন্যা সন্তানের সম্ভাবনা থাকে। আর রক্তচাপ বেড়ে গেলে, পুত্র সন্তানের সম্ভাবনা বেশি থাকে।’

মিষ্টি খাবারের আকাঙ্ক্ষা

গর্ভাবস্থায় বেশি মিষ্টি খাবার খাওয়ার ইচ্ছে থাকলে, অনেকে মনে করেন মেয়ে সন্তান হবে। আর যদি লবণ বা টক খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে, তবে ছেলে সন্তান হবে বলে ধারণা করা হয়। তবে, গবেষকরা বলেন, এসব অনুমান কেবল ধারণা মাত্র। গর্ভাবস্থায় খাবারের আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি মূলত কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টির অভাবের কারণে হতে পারে, এবং এর সঙ্গে সন্তানের লিঙ্গের কোনো সম্পর্ক নেই।

মেজাজের পরিবর্তন

গর্ভাবস্থায় মেজাজের হঠাৎ পরিবর্তন হলে অনেকে মনে করেন মেয়ে সন্তান হবে। তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। গবেষকরা বলেন, মেজাজের দ্রুত পরিবর্তন হরমোনের বৃদ্ধির কারণে হয়। গর্ভাবস্থার শুরুতে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরনের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

দেরি না করে চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই লক্ষণগুলো সস্পর্কে:

Table of Contents

মায়ের ওজন বৃদ্ধি দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?

মায়ের পেটে পোলা সন্তান থাকলে দৈহিক ওজন স্বাভাবিকের হতে প্রচুর বেড়ে যায় তার সাথে পেটটা একটু এক্সট্রা মাত্রায় ফোলা মনে হয়। প্রসঙ্গত, মেয়ে সন্তান পেটে থাকলে সাধারণত মায়ের সারা শরীরেই মেদের হার বৃদ্ধি পায়, এমনকি মুখেও। এই ভাবেই অনেকাংশে বুঝতে পারা সম্ভব হয় যে ছেলে ‘হতে চলেছে না মেয়ে।

আরও জানুনঃ প্রসব পরবর্তী বিপদ চিহ্ন বা প্রসব পরবর্তী জটিলতা ? নবজাতকের বিপদ চিহ্ন কয়টি ও কি কি?

পায়ের পাতা শীতল হয়ে যাওয়ার লক্ষণ থেকে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?

এ ধরনের লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটলে মনে বিশ্বাস রাখার চেষ্টা করবেন যে ছেলে সন্তানের আবির্ভাব ‘হতে চলেছে।

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে থাকার লক্ষণ থেকে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?

গর্ভে ছেলে না মেয়ে
গর্ভে ছেলে না মেয়ে


পেটের অবস্থা : গর্ভবর্তী মহিলার পেট নিচের দিকে বহু ঝুঁকে গেছে? এমনটা হলে পোলা সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

হার্ট রেট ওঠা-নামা : গর্ভাবস্তায় চিকিৎসকেরা প্রায়শই বাচ্চার হার্ট রেট মেপে থাকেন। এই টাইম যদি দেখা যায় বাচ্চার হার্ট রেট ১৪০ বিট/ প্রতি মিনিট রয়েছে, তাহলে মনে কোনো রাখবেন না যে ছেলে বাচ্চাই আবির্ভাব নিতে চলেছে।

আরও জানুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি সমস্যা হয় ? গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস কি ? মর্নিং সিকনেসে স্ত্রীর চিকিৎসা ?

প্রাসাবের রং দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


একাধিক তত্ত্বানুসন্ধানে একথা প্রমাণিত হয়েছে যে গর্ভাবস্তায় মায়ের প্রস্রাবের রং যদি গাড় হলদেটে হয়, তাহলে বুঝতে হবে ছেলে সন্তান ‘হতে চলেছে। আর যদি দেখেন উদ্ভাসিত হলুদ রঙের প্রস্রাব হচ্ছে, তাহলে এই বিষয়ে কোনো খটকা রাখার চেষ্টা করবেন না যে আপনি মেয়ে সন্তানের মা ‘হতে চলেছেন।

হাতের তালু দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


হাতের তালু বারে বারে শুকিয়ে যাবে : প্রেগন্যান্সির টাইম বারে বারে হাতের তালু শুকিয়ে যাওয়ার অর্থ হল পোলা সন্তান আবির্ভাব নিতে চলেছে।

infertility আপডেট তথ্য পেতে google news” অনুসরণ করুন

ক্ষুধা লাগার লক্ষণ দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


ক্ষুধা বেশি লাগা : ভাবি মায়ের ক্ষিদে কি ভীষণ বেড়ে গেছে? সামান্য সময় হৃদয় অন্তরই মনে হলো পেটে যেন ছুঁচো দৌড়াচ্ছে? তাহলে আপনাকে অভিনন্দন। রিজন ছেলে সন্তান হওয়ার প্রথমে এমনই সব লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে।

মর্নিং সিকনেস দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?

মর্নিং সিকনেস: একাধিক স্টাডিতে নোটিশ গেছে ভোরে নিদ্রা হতে ওঠার পর মাথা ঘোরা, বমি-বমি ভাব এসব লক্ষণ নোটিশ দিলে মনে কোনো অবিশ্বাস রাখবেন না যে, আপনার অনাগত সন্তান ছেলে।

আরও জানুন: আলট্রাসনোগ্রাফি কি এবং এর উপকারিতা কি কি ?সন্তান ছেলে বা মেয়ে হওয়ার জন্য দায়ী কে ?

বা দিকে ফিরে নিদ্রা দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


বা দিকে ফিরে নিদ্রা : কোন দিকে ফিরে ঘুমাচ্ছেন স্মরণ করুন! এই টাইম মা এতটাই পরিশ্রান্ত থাকেন যে শোয়ার সাথে সাথেই নিদ্রা চলে আসে। তারপক্ষে এটি বোঝা সম্ভবই হয় না যে কোন দিকে ফিরে তিনি ঘুমাচ্ছেন। এক্ষেত্রে এই কাজটি করার জন্য হবে স্বামীকে। যদি দেখেন আপনার গৃহিণী বাঁদিকে ফিরে ঘুমোচ্ছে, তাহলে আশা রাখার জন্য পারেন যে আপনাদের ছেলেই হবে।

হার্ট রেট ওঠা-নামা দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


হার্ট রেট ওঠা-নামা: গর্ভাবস্তায় চিকিৎসকেরা প্রায়শই বাচ্চার হার্ট রেট মেপে থাকেন। এই সময় যদি নোটিশ যায় বাচ্চার হার্ট রেট ১৪০ বিট/ প্রতি মিনিট রয়েছে, তাহলে মনে কোনও রাখার চেষ্টা করবেন না যে পোলা বাচ্চাই উৎপত্তি নিতে চলেছে।

আরও জানুন: মেয়েদের ডিম্বাণু বড় করার উপায় ?কি কি খাবার খেলে ডিম্বাণু বড় হয়? মেয়েদের ডিম্বাণু বড় করার উপায় ?

ব্রণর প্রকোপ দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?



ব্রণর প্রকোপ: প্রেগন্যান্সির সময় একাধিক হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হয় না। যে কারণে এমনিতেই বিভিন্ন রকমের ত্বকের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তা সত্ত্বেও যদি দেখেন ব্রণর প্রবলেম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তাহলে জানবেন আপনার পেটে ছেলে সন্তান বড় হয়ে উঠছে।

আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের যত্ন কি কি এবং গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা ? গর্ভবতী মায়ের কি কি চেকআপ করা দরকার ?

ব্রেস্টের মাপ দেখে গর্ভে ছেলে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


ব্রেস্টের মাপ: গর্ভাবস্তায় ভাবী মায়ের ব্রেস্টের মাপ এমনিতেই বেড়ে যায়। রিজন এই টাইম মায়ের শরীরে দুধের সঞ্চয় হতে আরম্ভ করে। প্রধারনত এই টাইম ডান দিকের হতে বাঁদিকের ব্রেস্ট একটু বেশি মাত্রায় ভারি হয়ে যায়। তবুও যদি উল্টো ঘটনা ঘটতে দেখেন তাহলে নিশ্চিত থাকবেন আপনার ছেলে থেকে চলেছে।

আরও জানুনঃ  গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার ?

চুলের ঘনত্বে পাল্টানো আসবে দেখে ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানার উপায় ?


চুলের ঘনত্বে পাল্টানো আসবে: মায়ের কেশের বৃদ্ধির হার দেখেও বলে দেওয়া সম্ভব ছেলে হতে চলেছে না মেয়ে। একের অধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে মায়ের কেশের গ্রোথ যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয়, তাহলে কোনও সন্দেহই থাকে না যে আসন্ন শিশু পোলা হতে চলেছে।

ডিসক্লেইমার: এখানে উপরোক্ত হেলথটিপস এবং পরামর্শগুলি অনুসরণ করার পূর্বে , ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিন।

রিলেটেড ট্যাগ: গর্ভে ছেলে না মেয়ে,গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে সহজ ঘরোয়া পরীক্ষায় জেনে নিন,কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি?,ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে থাকে, লক্ষণে বুঝবেন ছেলে নাকি মেয়ে হবে,ছেলে হবে না মেয়ে বলে দেবে সহজ এই পরীক্ষা,ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ,গর্ভে ছেলে না মেয়ে